বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাকের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করায় পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম টগরের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ।
বৃহষ্পতিবার (২৯ এপ্রিল) এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সাইফুল ইসলাম জেলা প্রশাসক রাজশাহী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বাঘা পৌরসভার বর্তমান মেয়র আব্দুর রাজ্জাক দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন হাট বাজারের ইজারার টাকা, পৌর মার্কেট বরাদ্দের টাকা, পৌরসভার শোভাবর্ধনের নামে ভুয়া ভাওচারের মাধ্যমে টাকা, জন্ম নিবন্ধন সনদ, ওয়ারিশন সনদ ইত্যাদির নির্ধারিত সরকারি চার্জের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে মেয়র আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও অবৈধ পন্থায় পৌরসভায় ১০টি পদে নিয়োগ প্রদানের চেষ্টা করে চাকুরী প্রত্যাশীদের নিকট থেকে বিপুল পরিমানে অর্থ নেয়া, পৌরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারদের কাছ থেকে অবৈধ কমিশন নেওয়ার কারনে কাজ নিম্নমান হওয়া, ইত্যাদি নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়মের কারনে মেয়র আব্দুর রাজ্জাক এর বিরুদ্ধে তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম গত বছরের নভেম্বর মাসে রাজশাহী জেলা জর্জ কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে চলমান রয়েছে।
এসকল ঘটনার পর মেয়র রাজ্জাক অন্যায়ভাবে অভিযোগকারী কাউন্সিলরের গত ৪ মাসের ভাতা বন্ধ করে রেখেছেন। তাকে মাসিক মিটিং এ উপস্থিত হতে দেওয়া হয় না। এমনকি তার ওয়ার্ডে পৌসভার সকল ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমানে এই ওয়ার্ডে ভিজিএফ কার্ড, ভিজিডি কার্ড বিতরণ, কৃষকদের কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ ও উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ আছে। সর্বোপরি কোভিড-১৯ করোনাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার প্রণোদনার অর্থ প্রদানে কাউন্সিলরকে বাদ রেখেই তালিকা প্রনয়ন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভূগী কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত । সেই সুবাদে বিগত পৌর নির্বাচনে জনগন আমাকে বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই দেখছি, জামাত বিএনপি সমর্থক মেয়র রাজ্জাক বাঘা পৌরসভাকে একটি লুটপাটের প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন। আমি তাঁর সিমাহিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদসহ আদালতে মামলা দায়ের করি। সেই কারনে মেয়র রাজ্জাক আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করছেন। আমার বিরুদ্ধে মাসিক মিটিং-এ অনুপস্থিতির অভিযোগ তুলে কাউন্সিলর পদ বাতিল করবার পাঁয়তারা করছেন।
এ বিষয়ে বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক কে মুঠোফোনে বারংবার কল দিয়ে যোগাযোগ করবার চেষ্টা করলেও কল রিসিভ হয়নি।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া সুলতানা বলেন, বিষয়টি আমি মৌখিক ভাবে শুনেছি। তবে পৌরসভা জেলা প্রশাসকের অন্তর্গত হওয়ায় এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.